Notes on memory in psychology
স্মৃতি বলতে কি বোঝায়?
স্মৃতি হলো একজন মানসিক প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে মানুষ কোন তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ এবং পুনরুদ্ধার করতে পারে।
এটি সাধারণত তিনটি ধাপে কাজ করে-
১. সংগ্রহ (Encoding)– নতুন তথ্য গ্রহণ করে সংরক্ষণের উপযোগী করে তোলে।
২. সংরক্ষণ (Storage)– তথ্যকে দীর্ঘমেয়াদী বা স্বল্প মেয়াদী সময়ের জন্য সংরক্ষণ করে রাখে।
৩. পুনরুদ্ধার (Retrieval)– সংরক্ষিত তথ্যকে পুনরায় মনে করার পদ্ধতি।
স্মৃতি থেকে তথ্য পুনরুদ্ধার করার প্রধান দুটি পদ্ধতি:
১. পুনরুদ্রেক– যখন কোন তথ্য বা অভিজ্ঞতাকে আমরা সরাসরি মনে করতে পারি। কোন ইঙ্গিত বা সংকেত এর প্রয়োজন হয় না।
২. প্রত্যাভিজ্ঞা– কোন সংকেত বা পরিচিত বিষয়কে দেখে যখন পূর্বে শেখা কোন তথ্যকে মনে করতে পারি তখন তাকে প্রত্যাভিজ্ঞা বলে।
স্মৃতির শ্রেণীবিভাগ: স্মৃতিকে সাধারণত নিম্নলিখিতভাবে ভাগ করা যায়। যথা-
Atkinson ও Shiffrin এর মতে স্মৃতির তিনটি মডেল রয়েছে। যথা-
১. স্বল্প স্থায়ী স্মৃতি বা short term memory:
Notes on memory in psychology
a.এই ধরনের স্মৃতি হল সাময়িক।
b.এর পরিসর ৩০ সেকেন্ড।
c.অনুশীলনের মাধ্যমে এই স্মৃতি স্থায়ী হতে পারে।
ক.সক্রিয় স্মৃতি বা( active memory):
- যে স্মৃতির মাধ্যমে আমরা স্বল্প সময়ের জন্য তথ্য সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াকরণ করতে পারি। এটি স্বল্পস্থায়ী স্মৃতির একটি অংশ।
- যেমন – কারো ফোন নাম্বার শোনার পর তা ডায়াল করা।
- হাতে ধরা যোগ অংক করতে পারা।
২. দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতি বা long turm memory:
Notes on memory in psychology
a.কোন বিষয় শেখার পর বা মুখস্থ করার পর তা যদি দীর্ঘ সময় ধরে মনে রাখা যায় তখন তাকে দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতি বলে।
b.একে স্থায়ী স্মৃতিও বলা হয়।
c.সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে।
ক..ব্যক্তিগত স্মৃতি : দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতির একটি ভাগ হলো ব্যক্তিগত স্মৃতি।
যেখানে ব্যক্তি তার নিজস্ব অভিজ্ঞতার ঘটনাবলী গুলিকে স্মৃতি হিসেবে সংরক্ষণ করে রাখে।
খ. নৈব্যক্তিক স্মৃতি(impersonal memory ):অন্যের কাছ থেকে বা বই পড়ে অর্জিত অভিজ্ঞতা স্বরণে।
- এটিও দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতির একটি ভাগ। এই স্মৃতিতে সাধারণ জ্ঞান, ভাষা, ধারণা, তথ্য প্রভৃতি সংরক্ষিত থাকে।
- এই স্মৃতি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে না।
গ. প্রকাশ্য স্মৃতি (Explicit memory)– সচেতন ভাবে মনে রাখার কোন তথ্য।
ঘ. অপ্রকাশ্য স্মৃতি (Implicit memory)– স্বয়ংক্রিয় অভ্যাস, যেমন -বাইক চালানো।
ঙ নিষ্ক্রিয় স্মৃতি or passive memory:
- নিষ্ক্রিয় স্মৃতি হল সেই স্মৃতি যা দীর্ঘদিন ধরে মস্তিষ্কে পড়ে থাকে কিন্তু প্রতিদিন তা সচেতন ভাবে ব্যবহার করা হয় না।
- যেমন -অঙ্কের কোন ফর্মুলা ছোটবেলায় শিখলেও এখন তা খুব একটা ব্যবহৃত হয় না।
- ছোটবেলায় শেখা, ক খ গ ঘ প্রতিদিন ব্যবহৃত না হলেও আমরা অনায়াসেই মনে করতে পারি।
চ.যান্ত্রিক বা অভ্যাসগত স্মৃতি:
notes on memory in psychology
কোন বিষয়বস্তু না বুঝে বারবার পুনরাবৃত্তির ফলে মনে রাখা কে যান্ত্রিক বা অভ্যাসগত স্মৃতি বলে। যেমন সাইকেল চালানো, টাইপ করা , সাঁতার কাটা ইত্যাদি।
ছ. যৌক্তিক বা প্রকৃত স্মৃতি: বিষয়বস্তুকে বুঝে পড়ার পর মনোকল্প বা mental image সাহায্যে স্মরণ করাকে logical memory or true memory বলে।
৩.. সংবেদনশীল স্মৃতি(sensory memory)–
আমাদের ইন্দ্রিয়ের দ্বারা সংগৃহীত তথ্য যা কিছু সময়ের জন্য ধরে রাখে। যেমন- দৃষ্টি , শ্রবণ ,স্পর্শ ,স্বাদ ইত্যাদির মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে।
ক.তাৎক্ষণিক স্মৃতি: শিখনের পর স্বল্প সময়ের ব্যবধানে স্মরণ করাকে তাৎক্ষণিক স্মৃতি বলে। এর পরিসর ১/২ সেকেন্ড। এই স্মৃতি যদি গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় তাহলে এটি স্বল্প মেয়াদী বা দীর্ঘ মেয়াদী স্মৃতিতে রূপান্তরিত হয়।
স্মৃতিভ্রংশের কারণ – নিম্নলিখিত কারণগুলোর জন্য স্মৃতিভ্রষ্ট হয়ে যায়।
notes on memory in psychology
1.Amnesia– ব্যক্তি পূর্বের স্মৃতি মনে রাখতে বা সংরক্ষণ করতে পারেনা। এটি আবার তিন প্রকার-
- Retrograde amnesia – পুরনো স্মৃতি হারিয়ে ফেললেও নতুন স্মৃতি তৈরি করতে সমস্যা হয় না।
- Anterograde Amnesia – পুরনো স্মৃতি মনে রাখতে পারে কিন্তু নতুন স্মৃতি তৈরি করতে পারে না।
- Source Amnesia – পুরনো স্মৃতির তথ্য মনে থাকে কিন্তু উৎস মনে থাকে না।
2. অ্যালজাইমার ডিজিজ– শুরুতে ছোটখাটো তথ্য ভুলে যায় কিন্তু পরবর্তীতে বড় স্মৃতি লোপ পায়। কথা বলা ও দৈনন্দিন কাজ করতে অসুবিধা হয়।
3. Dementia – স্মৃতিশক্তি স্থায়ীভাবে নষ্ট হয়ে যায়। মস্তিষ্কের রক্ত প্রবাহ বা অস্বাভাবিক প্রোটিন জমে স্মৃতিভ্রংশ ঘটে।
4. Korsakoff’s Syndrome – ভিটামিন বি-1 এর অভাব থেকে এই সমস্যা হয়। পুরনো স্মৃতি হারিয়ে যায় ও মিথ্যা স্মৃতি তৈরি হয়।
এছাড়াও ,
5 . Traumatic Brain Injurie(TBI)– মাথায় কোন আঘাত পাওয়ার পরে স্মৃতিশক্তি কমে যায়।
স্মৃতি ধরে রাখার উপায়:
notes on memory in psychology
- চাংকিং– তথ্যকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করা এবং
- নেমনিক্স(Mnemonics)- কোন একটি বড় তথ্যের শুরুর বর্ণ গুলো দিয়ে শব্দ তৈরি করে সহজে মনে রাখার কৌশলকে নেমোনিক্স বলে। যেমন- VIBGYOR – এটি হলো একটি নেমোনিক্স এর উদাহরণ। কারণ এই শব্দটিতে সাতটি বর্ণ লুকিয়ে রয়েছে।
For more related To memory click here.